গ্রাম বাংলার সেরা দেশি মাছের তালিকা

গ্রাম বাংলার সেরা মাছের তালিকা

বাংলাদেশের জলাশয়ে দেশি মাছের একটি বিশাল বৈচিত্র্য রয়েছে, যা আমাদের খাদ্যতালিকাকে পুষ্টিসমৃদ্ধ এবং সুস্বাদু করে তোলে। দেশি মাছের জনপ্রিয়তা এবং পুষ্টিগুণের কারণে এর চাহিদা সর্বদাই উচ্চ। তবে বর্তমানে দেশি মাছ চেনা এবং সঠিক মূল্য নির্ধারণ করা সহজ কাজ নয়। এর কারণ বাজারে নানা প্রকারের দেশি মাছ পাওয়া যায়। আর তাই সঠিক গুণগত মান ও আসল দেশি মাছের পার্থক্য নির্ধারণ করা ক্রেতাদের জন্য বেশ কঠিন হয়ে পড়ে।

বাজারে মাছের মূল্যে ভিন্নতা নির্ভর করে মাছের প্রকারভেদ, মাছের আকার, তাজা বা জমাট বাঁধা অবস্থা এবং উৎপাদনের মৌসুমের ওপর। এই আর্টিকেলটিতে আমরা বিভিন্ন দেশি মাছ এবং তা চেনার উপায়, বাজারের বিভিন্ন প্রকার মাছের দাম এবং কীভাবে উন্নত মানের দেশি মাছ কেনা যায় তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

গ্রাম বাংলার সেরা রানী ইলিশ

ইলিশ তো বাঙালির জাতীয মাছ। ইলিশের কালিয়া, ইলিশ ভাপা, ইলিশ পোলাও – এই সব খাবার তো সবারই প্রিয়।

বাংলার রুই, কাতলা, মৃগেল

বাংলার রুই, কাতলা, মৃগেল – এই তিন মাছ তো বাঙালির রান্নাঘরে সবসময়ই থাকে যা গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য। রুই মাছের কাঁটা কম তার পরে অনেক কে বড় , তাই ছোট বাচ্চাদের জন্যও খুব ভালো মনে করি গ্রামে অনেক জনপ্রিয়। কাতলা মাছের ঝোল দিহে সবাই ভালোবাসে তো সবারই পছন্দের। আর মৃগেল মাছের ভাপা তো এক কথা সেই লাগে!

গ্রাম বাংলার চিংড়ি, পাবদা, টাকি

বাংলার চিংড়ি, পাবদা, টাকি – এই মাছগুলো গ্রাম বাংলার পুকুরে পাওয়া সব সময় চিংড়ি মাছের তেতুলের সে তো অনেক ভালো ভালোবাসে গ্রাম আর মানুষ চাটনি তো এক অন্য রকম স্বাদ। পাবদা মাছের ভাজা আর টাকি মাছের কড়াই তো সবারই মুখে জল আনে খেতে অনেক মজা লাগে।

দেশি মাছ

মাছের নাম শিং মাছ: শিং মাছের কাঁটা কম হওয়ায় ছোট বাচ্চাদের জন্য খুবই জনপ্রিয়।
তেলাপিয়া: মাছ খুব নরম এবং সুস্বাদু হয়ে তাঁকে।
কৈ গ্রাম বাংলার: এক জনপ্রিয় কৈ মাছের ঝোল অনেকেরই ভালোবাসে।
জনপ্রিয় পাঙাশ গ্রাম বাংলার: পাঙাশ মাছের ভাজা খেতে খুবই সুস্বাদু।

গ্রামের মাছ কেন সেরা?

গ্রাম বাংলার জনপ্রিয় স্বাদ শহরের মাছের থেকে অনেক ভিন্ন হয়ে তাঁকে। কারণ, গ্রামের মাছ পরিষ্কার পানিতে বড় হয় এবং প্রাকৃতিক খাবার খেয়ে বড় হয় খুব একটা জোরে বড় হয় না শহরে মাছ অনেক বড় হয়। তাই গ্রামের মাছের মাংসে অনেক বেশি পুষ্টিগুণ থাকে।

সব মাছের ইংরেজি নাম – All Fish Name in English and Bengali

৫০ টি মাছের নাম

বাংলা নাম ইংরেজি নাম
ইলিশ HILSHA
কৈ মাছ CLIMBING FISH
কাতল CARP
কাঁকড়া CRAB
চিংড়ি (গলদা) LOBSTER
চিংড়ি (শলা) PROWN
চিংড়ি মাছ SHRIMP
চান্দা মাছ MOON FISH
তিমি WHALE
তারা মাছ STAR FISH
পুঁটি মাছ SMALL FRY
ফলুই মাছ FLAT FISH
বাগদা চিংড়ি SPRAWN
বোয়াল মাছ TROUT
বাইন মাছ EEL FISH
মাগুর মাছ CAT FISH
মাছের ডিম ROE
রুই SALMON
শুটকি মাছ DRY FISH
শিল মাছ SEAL FISH
শিং মাছ BARBEL
হাঙ্গর SHARK

কোরাল মাছের

কোরাল মাছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে, যা শরীরের কোষ গঠন ও মেরামতের জন্য অত্যন্ত জরুরি কাজ করে তাই এটা খেতে অনেক স্বাদ হয়ে তাকে।

এইখানে ওমেগা-৩সহ ফ্যাটি অ্যাসিড: এই ফ্যাটি অ্যাসিড হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং আর জন্যে অনেক ভালো কাজ করে  হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে তাঁকে। এছাড়াও এটি আমাদের মস্তিষ্কের  উন্নত করে এবং মনোযোগ বাড়াতে সহায়তা করে। কোরাল মাছে ভিটামিন বি১২, নিয়াসিন, ফসফরাস এবং সেলেনিয়ামের মতো গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ রয়েছে, যা শরীরের বিভিন্ন কাজে সহায়তা করে। কোরাল মাছ দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে পারে কোরাল মাছে থাকা ভিটামিন এ  রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকে।

পুকুরের মাছের নাম

মাছের নাম বিশেষ বৈশিষ্ট্য
রুই স্বাদুপানির বড় আকারের মাছ, মাংসল
কাতলা দ্রুত বর্ধনশীল মাছ, মাংসল
মৃগেল দীর্ঘায়িত দেহ, মাংসল
কালবাউশ চ্যাপ্টা দেহ, তলদেশে বসবাস করে
বিগহেড বড় মাথা, মাংসল
কমন কার্প সার্বভোমী, দ্রুত বর্ধনশীল
তিলপিয়া ছোট আকারের, দ্রুত বর্ধনশীল

ভালো মানের দেশি মাছ চেনার উপায় কি?

ভালো মানের দেশি মাছ চেনার জন্য কয়েকটি বিষয় লক্ষ্য করা প্রয়োজন। প্রথমত, মাছের শরীর টানটান ও উজ্জ্বল হতে হবে এবং আঁশগুলো উজ্জ্বল ও শক্ত থাকবে। তাজা মাছের চোখ স্বচ্ছ ও উজ্জ্বল হয়, কোটরাগত বা ফ্যাকাসে নয়। মাছের গায়ের রং উজ্জ্বল এবং শরীরের অংশে কোনো দাগ বা ক্ষত থাকা উচিত নয়। তাজা মাছ থেকে মৃদু কাঁচা গন্ধ আসে, তবে এটি কখনোই পচা বা তীব্র দুর্গন্ধযুক্ত হয় না।

মাছের পেটের অংশ চ্যাপ্টা ও শক্ত হলে তা তাজা মাছের লক্ষণ। মাছের কাঁটা (গিলস) গাঢ় লাল বা গোলাপি রঙের এবং শ্বাসনালী পরিষ্কার থাকা উচিত। এছাড়া, হাত দিয়ে চাপ দিলে মাছের মাংস শক্ত অনুভূত হয় এবং চাপের দাগ থেকে গেলে তা তাজা মাছের লক্ষণ। এসব বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করলে সহজেই ভালো মানের দেশি মাছ চেনা যায়।

দেশি কোন মাছের কেমন দাম?

বাংলাদেশের দেশি মাছের দাম সাধারণত মাছের প্রকার, আকার, মৌসুম এবং সরবরাহের ওপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। সাধারণত, রুই, কাতলা এবং মৃগেল মাছের দাম তুলনামূলকভাবে কম থাকে, যা কেজি প্রতি ২০০-৪০০ টাকার মধ্যে থাকে, কারণ এগুলো পুকুরে ব্যাপকভাবে চাষ করা হয় এবং বাজারে সহজলভ্য। তবে, যদি মাছের আকার বড় হয় বা বিশেষ জাতের হয়, তবে এর দাম আরও বাড়তে পারে।

শিং, মাগুর ও কৈ মাছের দাম সাধারণত বেশি, যা ৪০০-৭০০ টাকা প্রতি কেজির মধ্যে থাকে, কারণ এদের চাষ ও সংগ্রহের প্রক্রিয়া জটিল এবং এগুলো পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ।

টেংরা, পাবদা এবং পুঁটি মাছ ছোট আকারের হলেও এদের স্বাদ ও পুষ্টিগুণের কারণে এদের দামও ৩০০-৬০০ টাকা প্রতি কেজির মধ্যে ওঠানামা করে। বোয়াল, আইড় ও চিতল মাছ আকারে বড় এবং সুস্বাদু হওয়ায় এদের দাম অনেক বেশি হয়, যা ৫০০-১০০০ টাকা বা এরও বেশি প্রতি কেজি হতে পারে, বিশেষ করে যদি মাছটি প্রাকৃতিক জলাশয়ে ধরা হয়।

বর্ষা মৌসুমে দেশি মাছের প্রাচুর্য থাকলে দাম কিছুটা কমে, তবে শীতকালে সরবরাহ কম থাকায় দাম বৃদ্ধি পায়। এছাড়া, গ্রামাঞ্চলের তুলনায় শহরের বাজারে দেশি মাছের দাম তুলনামূলকভাবে বেশি হয়ে থাকে।

উপসংহার

মাছের পুষ্টিগুণ, স্বাদ এবং বৈশিষ্ট্য আমাদের খাদ্যাভ্যাসে একটি বিশেষ স্থান দখল করে রেখেছে। উন্নত মানের দেশি মাছ কেনা এবং চেনার কৌশল জানা আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি। সঠিকভাবে মাছের গুণমান চেনা এবং দামের তুলনামূলক ধারণা থাকা আমাদেরকে উন্নত মানের মাছ ক্রয় করতে সাহায্য করে।

তাই, দেশি মাছ কেনার সময় কিছু মৌলিক বিষয়ে লক্ষ্য রাখা এবং সচেতন হওয়া প্রয়োজন। সচেতনতার মাধ্যমে আমরা আসল দেশি মাছের প্রকৃত স্বাদ ও পুষ্টিগুণ উপভোগ করতে পারি এবং আমাদের প্রতিদিনের খাবারের টেবিলকে আরো সমৃদ্ধ করতে পারি।