এই পর্বে আমরা আপনাদের কাছে তুলে ধরবো বাংলার উৎসব প্রবন্ধ রচনা class 10। এই রচনাটি অর্থাৎ বাংলার উৎসব ৪০০ শব্দের প্রবন্ধ যা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক উভয় ছাত্র ছাত্রীদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।
তাছাড়া এই পর্বে আমরা সংক্ষিপ্ত আকারে আলোচনা করেছি বাংলার উৎসব প্রবন্ধ রচনা class 7, বাংলার উৎসব প্রবন্ধ রচনা class 8
বাংলার উৎসব
ভূমিকা:
বাঙালীর বারো মাসে তোরো পার্বন। তাই বাঙালীর উৎসবের শেষ নেই। আসলে বাঙালীর মানসিকতা হল দূরকে নিকট করা। এই আন্তরিকতার গুনেই সবাইকে নিয়ে উৎসবে মেতে উঠতে চায় বাঙালী। সেইজন্য ঈশ্বর গুপ্ত যথার্থ -ই বলেছেন –
“এত ভঙ্গ বঙ্গদেশ তবু বঙ্গোভরা ।”
শুধুতাই নয়, বাঙালীর উৎসবে বৈচিত্রও যথেষ্ট।
উৎসবের প্রয়োজনীয়তা:
উৎসবের দিনগুলি মানুষের পারস্পরিক মিলনের বৃহৎক্ষেত্র। প্রতিদিনের একঘেয়েমি জীবনে বাঁচার জন্য মানুষ উৎসবের আয়জন করেন। উৎসবের দিনে মানুষ সমস্ত ক্ষুদ্রতা, হীনতা অতিক্রম করে আনন্দের উৎসবে মেতে ওঠে অর্থাৎ প্রাণের আনন্দের আস্বাদন পায়। এই প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন –
“প্রতিদিন মানুষ ক্ষুদ্রদীন একাকী। কিন্তু উৎসবের দিনে মানুষ বৃহৎ, সে সমস্ত মানুষের সঙ্গে একত্র হয়ে বৃহৎ, সেদিন সে সমস্ত মনুষসত্ত্বের শক্তি অনুভব করে মহৎ ।”
উৎসবের বৈচিত্র:
বাঙালীর সাংস্কৃতিক বৈচিত্রই তাদের উৎসবের বৈচিত্রকে সূচিত করে। প্রাকৃতিক পরিবেশ ধর্মাচরণ জীবনধারার বৈচিত্র অনুযায়ী উৎসবের বৈচিত্র লক্ষ্য করা যায়।
জাতীয় উৎসব:
জাতীয় উৎসবগুলিতে জাতীয় সংহতি ও ঐক্যকে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়। জাতীয় উৎসবের মধ্যে রয়েছে নানান স্মরণ অনুষ্ঠান। সেগুলি হল – স্বাধীনতা উৎসব, প্রজাতন্ত্র দিবস, গান্ধীজীর জন্ম দিবস, নেতাজীর জন্ম দিবস ইত্যাদি।
সামাজিক উৎসব:
বাঙালীর উৎসবের মধ্যে সামাজিক উৎসবই সবথেকে বেশি। এই শ্রেণীর উৎসবে সামাজিক মানুষ বেশি করে পরস্পরের সাথে মিলিত হতে পারে। বিবাহ, অন্নপ্রাশন, জন্মদিন, জামাইষষ্ঠী, ভাই ফোঁটা, এই সকল অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে পারস্পরিক মনমানিল্য দূর হয়ে মিলনের বন্ধন তৈরি হয়।
ধর্মীয় উৎসব:
বাঙালী জাতী নানা রকম ধর্মে বিশ্বাসী। তাই ধর্মকে কেন্দ্র করে নানা উৎসবের আয়জন করা হয়। বাঙালীর প্রধান উৎসব হল দূর্গাপূজা। এছাড়া কালিপূজা , সরস্বত পূজা, লক্ষীপূজা , বিশ্বকর্মা পূজা প্রভৃতি পূজার আয়জন করা হয়। এই সব উৎসবে একে অপরকে শুভেচ্ছা বিনিময় করে।
ঋতু উৎসব:
ঋতুর সাথে সম্পর্ক রেখে বাঙালীরা নানান উৎসবে মেতে ওঠে। বছরের শুরুই হয় নববর্ষ পালনের মধ্যে দিয়ে নতুন ফসল কাটার সময় হয় নবান্ন ও পৌষ পার্বন। শীত ঋতুকে করে পৌষ -পার্বন। বসন্তকে কেন্দ্র করে দোলযাত্রা প্রভৃত।
উৎসবের মূল্যায়ন:
বিশ্বায়নের প্রভাবে বাঙালী সংস্কৃতি যেমন পালটে যাচ্ছে তেমন উৎসবেরও পালাবদল হয়েছে। এখন উৎসব-ও বিপন কেন্দ্রিক বা মার্কেট। একথা ঠিক উৎসবকে কেন্দ্র করে বহু মানুষের জীবিকার সংস্থান হয়। এদিক থেকে উৎসবের একটা অর্থনৈতিক গুরুত্ব আছে। বর্তমান উৎসবের মধ্যে প্রতিযোগিতা আরম্বর , কৃত্রিমতা এতটাই বেড়েছে যে, মানুষের মধ্যে আন্তরিকতার অভাব ঘটেছে।
উৎসবের বৈশিষ্ট্য ও প্রয়োজনীয়তা:
উৎসব বহু মানুষের মিলনের ক্ষেত্রে প্রশস্ত করে, প্রীতির সম্পর্কে দৃঢ় হয়, এখানেই উৎসবের সার্থকতা। উৎসব বহু মানুষের মধ্যে প্রীতি ও ভালোবাসার সেতুবন্ধন। জাতীয় ঐক্যের মূল সুরটি এর মধ্যেই নিহিত। “এত ভঙ্গ বঙ্গ দেশ, তবু রঙ্গে ভরা” অভাব – অনটন দারিদ্র্য এসবের মধ্যেই আমাদের দিন গুজরান। এসবের থেকে সাময়িক মুক্তি লাভের জন্যই উৎসবের প্রয়োজন।
উপসংহার:
“বাঙালীর উৎসবের মূল চেতনা ছিল দিবে এর নিবে মিলাবে মিলিবে” -কিন্তুর এখন নেই, পারস্পরিক কল্যান কামনা। তাই উৎসব পাগল বাঙালীর অন্তরের কামনা এই হোক বাংলার উৎসব আবার সেই মিলন ও শান্তির বাণী বহন করে নিয়ে আসুক।
কিন্তু আজকাল বাইরের আড়ম্বর এত বেশি প্রাধান্য পেয়েছে যে উৎসবের মূল ধর্মই বিনষ্ট হতে বসেছে বা হয়ে গেছে। এখন আর ভাবের প্রাধান্য নেই, আছে চোখ ধাঁধানো জৌলুষ, আছে বাহ্যিক আড়ম্বর। এর অবসান জরুরি। মনে রাখতে হবে- “আমাদের উৎসব ভাবের প্রাধান্য, বাহিরের সমারোহ তার প্রধান অঙ্গ নহে ।”
বাংলার উৎসব প্রবন্ধ রচনা class 7, বাংলার উৎসব প্রবন্ধ রচনা class 8
ভূমিকা:
কর্মক্লান্ত মানুষের একঘেয়ে জীবন যাত্রার মাঝে উৎসব নিয়ে আসে বৈচিত্র্য। এ যেন নিশ্ছিদ্র অন্ধকারের মধ্যে হঠাৎ এক আলোর ঝলকানি। স্মৃতির মণিকোঠায় দীপের মতো জ্বালিয়ে রাখি, তেমন কিছুই থাকে না প্রাত্যহিক তুচ্ছ জীবনে। তাই বুঝি উৎসবের আয়োজন। উৎসবে কাটে একঘেয়েমি। জীবনে নিয়ে আসে আনন্দ, পরিপূর্ণ প্রাশান্তিতে ভরে যায় মনপ্রাণ, উৎসবের আনন্দ স্বল্প স্থায়ী, কিন্তু ধূপের গন্ধের মতো তার প্রভাব অতীব গভীর।
উৎসবের প্রকারভেদ:
কথায় বলে , ‘বাঙালির বারো মাসে তোরো পার্বণ ’ । পার্বণগুলির প্রায় সবকটিই ধর্মীয়। ধর্মীয় ছাড়াও আছে সামাজিক উৎসব, সাংস্কৃতিক উৎসব এবং জাতীয় উৎসব। বর্তমানে এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আন্তর্জাতিক উৎসব। ঋতুচক্রের আবর্তনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই যেন বাংলার উৎসবগুলি উদ্যাপিত হয়। সেই কারণেই বাংলাদেশে সারা বছরই কোনো না কোনো উৎসব লেগেই থাকে।
বাংলার নানা উৎসব:
বাংলায় নববর্ষের দিনের অনুষ্ঠানের সঙ্গে সঙ্গে বাংলার উৎসবের সূচনা। এরপর পর্যায়ক্রমে রথযাত্রা, জন্মাষ্টমী, ঝুলন, বিশ্বকর্মা, দূর্গোৎসব, লক্ষ্মীপূজা, কালীপূজা, জগদ্ধাত্রী, রাস উৎসব, পৌষ পার্বণ , সরস্বতী ধর্মীয় উৎসবের সমাপ্তি। পালিত হয় জন্মদিন , অন্নপ্রাশন, বিবাহবার্ষিকী ইত্যাদি নানা পারিবারিক অনুষ্ঠান। সাংস্কৃতিক উৎসবগুলি মধ্যে আছে রবীন্দ্র জয়ন্তী, নজরুল জয়ন্তী, বিভিন্ন মনীষীদের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠান। আজকাল আবার বিশ্ব শিশুবর্ষ, বিশ্ব প্রতিবন্ধীবর্ষ, কিংবা নারীবর্ষ ইত্যাদি উৎসব পালন করা হচ্ছে।
খ্রিস্টানদের ‘বড়দিন’ তো বাঙালি মাত্রই প্রায় নিজেদের করে নিয়েছেন। মোমবাতি জ্বালানো, যীশুর পাদপদ্মে প্রণাম, রঙবেররঙের টুপি পরিধান করে আর কেক – পুডিং খাওয়ার আসর আজ বাংলার ঘরে ঘরে। এছাড়াও গুডফ্রাইডে, বৌদ্ধদের বুদ্ধপূর্ণিমা, মহাবীর জয়ন্তী গুরু নানকের জন্মদিন্ প্রভৃতি আমাদের মনে খুশির জোয়ার আনে।
উৎসবের প্রয়োজনীয়তাঃ
উৎসব বহু মানুষের মিলনের ক্ষেত্রে প্রশস্ত করে, প্রীতির সম্পর্কে দৃঢ় হয়, এখানেই উৎসবের সার্থকতা। উৎসব বহু মানুষের মধ্যে প্রীতি ও ভালোবাসার সেতুবন্ধন। জাতীয় ঐক্যের মূল সুরটি এর মধ্যেই নিহিত। “এত ভঙ্গ বঙ্গ দেশ, তবু রঙ্গে ভরা” অভাব – অনটন দারিদ্র্য এসবের মধ্যেই আমাদের দিন গুজরান। এসবের থেকে সাময়িক মুক্তি লাভের জন্যই উৎসবের প্রয়োজন।
উপসংহারঃ
“বাঙালীর উৎসবের মূল চেতনা ছিল দিবে এর নিবে মিলাবে মিলিবে” -কিন্তুর এখন নেই, পারস্পরিক কল্যান কামনা। তাই উৎসব পাগল বাঙালীর অন্তরের কামনা এই হোক বাংলার উৎসব আবার সেই মিলন ও শান্তির বাণী বহন করে নিয়ে আসুক।
বাংলার উৎসব রচনা ক্লাস 4, বাংলার উৎসব রচনা ক্লাস 5, বাংলার উৎসব রচনা ক্লাস 6
কথায় বলে , ‘বাঙালির বারো মাসে তোরো পার্বণ ’ । পার্বণগুলির প্রায় সবকটিই ধর্মীয়। ধর্মীয় ছাড়াও আছে সামাজিক উৎসব, সাংস্কৃতিক উৎসব এবং জাতীয় উৎসব।বাংলায় নববর্ষ থেকে বাঙালির উৎসব শুরু হয় এবং পর্যায়ক্রমে রথযাত্রা, জন্মাষ্টমী, ঝুলন, বিশ্বকর্মা, দূর্গোৎসব, লক্ষ্মীপূজা, কালীপূজা, জগদ্ধাত্রী, রাস উৎসব, পৌষ পার্বণ , সরস্বতী ধর্মীয় উৎসবের সমাপ্তি। পালিত হয় জন্মদিন , অন্নপ্রাশন, বিবাহবার্ষিকী ইত্যাদি নানা পারিবারিক অনুষ্ঠান। সাংস্কৃতিক উৎসবগুলি মধ্যে আছে রবীন্দ্র জয়ন্তী, নজরুল জয়ন্তী, বিভিন্ন মনীষীদের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠান।
উৎসব বহু মানুষের মিলনের ক্ষেত্রে প্রশস্ত করে, প্রীতির সম্পর্কে দৃঢ় হয়, এখানেই উৎসবের সার্থকতা।উৎসব বহু মানুষের মধ্যে প্রীতি ও ভালোবাসার সেতুবন্ধন রচনা করে।উৎসবে কাটে একঘেয়েমি। জীবনে নিয়ে আসে আনন্দ, পরিপূর্ণ প্রাশান্তিতে ভরে যায় মনপ্রাণ।