আপনি যখন সমুদ্রের পাশে বসে আপনার প্রিয় পানীয়ের এক গ্লাস পান করেন এবং সূর্যাস্তের কথা ভাবেন তখন ভাবেন তখন কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের নামটি মনে আসে। লাবনী পয়েন্ট, ইনানী বা হিমছড়ি ছাড়াও সমুদ্রের উজ্জ্বল সৌন্দর্য প্রত্যক্ষ করতে আপনার তালিকায় আরও কিছু জায়গা যুক্ত করা যেতে পারে।
পরের বার আপনি কক্সের বাজারে ঘুরে দেখলে ভ্রমণের স্বাদ উপভোগ করতে এই অবিশ্বাস্য সৈকতগুলি দেখতে ভুলবেন না!
সোহনখালী সমুদ্র সৈকত
সোহনখালী সমুদ্র সৈকত উপকূলে কয়েকশো সাম্পান বা ফিশিং নৌকা দ্বারা বেষ্টিত সমুদ্র উপকূলে ভাসমান। দীর্ঘ মাছ ধরার পরে বিশ্রামের জন্য জেলে এই সৈকতে তাদের জাহাজগুলি এই সৈকতে নোঙ্গর করে। রঙিন সাম্পানগুলি যা একত্রিত হয় সেগুলি সৈকতের সুন্দর দৃশ্যটিকে আরও সুন্দর করে তোলে। যেহেতু সোহনখালী সৈকতের অবস্থানটি শহর থেকে বেশ দূরে, দিনের বেলা এটি দেখতে ভাল।
বেস্টওয়ে লং বিচ
কলাতলী থেকে প্রায় ৫৪ কিলোমিটার দূরত্বে মেরিন ড্রাইভ রোড বরাবর অবস্থিত বেস্টওয়ে লং বিচের সৌন্দর্যটি কেবল আশ্চর্যজনক। সমুদ্রের প্রাচীন সৌন্দর্যের চেয়েও বেশি, এই সৈকতের বেলে পরিবেশে সবুজ গাছের সারি গুলি চিত্রটি কাউকে মুগ্ধ করার ক্ষমতা রাখে। এছাড়াও, বেস্টওয়ে লং বিচের নীল জলগুলি সৈকত প্রেমীদের স্বপ্নগুলি সত্য হয়ে উঠেছে; যা অন্যান্য জনপ্রিয় সৈকতে উপলভ্য নয়। সুতরাং ইনস্টাগ্রামে আপলোড করার জন্য আপনাকে আদর্শ ফটো পেতে আপনাকে সেখানে যেতে হবে না।
সি পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা
কক্সবাজারের থেকে মাত্র ৪০ মিনিট দূরে, এটি সি পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা শিথিল করার জন্য বিলাসবহুল আবাসন, পুল, জিম এবং স্পা সুবিধা সরবরাহ করে। তাদের নিজস্ব বিশাল সৈকত ৬০,০০০ বর্গফুট। সেখান থেকে আপনি পূর্ব দিকে সবুজ পাহাড় এবং পশ্চিমে অসীম সমুদ্রের একটি অতুলনীয় সুন্দর দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন। বিলাসিতা এবং প্রশান্তির উপর জোর দিয়ে, এটি সি পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা হ’ল কক্সের বাজারের তাড়াহুড়ো থেকে দূরে সমুদ্রের নির্মলতা উপভোগ করার উপযুক্ত জায়গা।
মারমেইড বিচ রিসোর্ট
মারমেইড বিচ রিসোর্ট ছাড়াই রিসোর্ট সেরা সৈকত তালিকাভুক্ত করার বিষয়ে চিন্তা করা অসম্ভব। রামুতে অবস্থিত জনশূন্য পরিবেশে মনোমুগ্ধকর সময় কাটানোর জন্য এই রিসোর্টে ব্যবস্থা করা হয়েছে প্রয়োজনীয় সবকিছুর। সৈকতে দ্রুত যাওয়ার সুবিধাসহ কমপ্লেক্সটিতে দুর্দান্ত রেস্তোঁরা রয়েছে এবং প্রতিটি বাংলো এবং ভিলা একটি সংলগ্ন টেরেস এবং বাগান রয়েছে।
এই জিনিসগুলি ছাড়াও, মারমেইড রিসোর্টের পরিবেশ এবং সৈকত যে কাউকে মন্ত্রমুগ্ধ করে। সমুদ্রের আকর্ষণীয় পরিবেশ এবং পর্যটন মহাসড়কের পাশের ব্যাঙের ক্রোয়ার, বিশেষত সূর্যাস্তের সময় কেবল অবিশ্বাস্য। কক্সবাজার শহরের কলাতলী মূল পয়েন্ট থেকে আপনি গাড়িতে উল্লিখিত সমস্ত সৈকত, রিকশা অটো, অটো এবং মোটর জিএনসির সাথে জিপে পৌঁছাতে পারেন।
পাটুয়ারটেক সমুদ্র সৈকত
পাটুয়ারটেক এর সমুদ্র সৈকতটি কক্সবাজার থেকে টেকনাফ এর দিকে মাত্র ২৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি নির্জন সি বীচ। ভ্রমন বিলাসীরা যদি সিন্ধ সতেজ নির্মল সাগরে বাতাস অনুভব করতে চায় তাহলে অবশ্যই যেতে হবে পাটুয়ারটেক সি বীচে। কক্সবাজারের অন্য সমুদ্র সৈকত থেকে পাটুয়ারটেক সমুদ্র সৈকতটি ভ্রমন পিপাসুদের কাছে একটু আলাদা মনে হবে। এই সমুদ্র সৈকতটির নির্জনতা যে কাউকে ভ্রমন করার জন্য কাছে টানবে। পাটুয়ারটেক যাত্রাপথে ভ্রমন বিলাসীরা দেখতে পাবে পূর্বপাশের টারশিয়ারী যুগের পাহাড় এর উপর গাছ,লতাপাতা যেন পাহাড় গুলোর কুলে শুয়ে রয়েছে। আর পশ্চিম দিকে দেখতে পাবে সুনীল সাগরের বিশাল জল রাশি। পাহাড় ও সুনীল সমুদ্রের এই অপরুপ দৃশ্য সত্যি খুবই মনোরম যা যে কোন পর্যটন প্রেমিকে পাটুয়ারটেক সমুদ্র সৈকতে ঘরতে আসতে আকৃষ্ট করবে।
সমুদ্র সৈকতটি আরেটি সু্ন্দর বৈশিষ্ট্য হলো এখানে ভ্রমন বিলাসীরা দেখতে পাবে টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন এর মত বিশাল প্রবাল পাথরের স্তুপ। তাছাড়া পাটুয়ারটেক সমুদ্র সৈকত প্রায় সব সময় শান্ত থাকে। তাই যারা উত্তাল সাগরে নামতে ভয় পায় তারা ইচ্ছে করলে পাটুয়ারটেক সৈকতে নামতে পারেন। তাছাড়া কক্সবাজারের অন্য সি বীচ গুলোর মত এখানে কুলাহল একেবারে নাই বললেই চলে। খুব অল্প সংখ্যক ভ্রমন পিপাসুই এই নির্জন সৈকতে ঘুরতে আসে।
সমুদ্র সৈকতটি ঘুরে বেড়ানোর জন্য আর্দশ্য সময় হলো খুব সকাল বা পড়ন্ত বিকেল। তাছাড়া ভর দুপুরে এখানে প্রচন্ড সূর্যের তাপ পরে যা পর্যটকদের জন্য এখানে অবস্থান করা খুব কষ্টের কাজ। কারন কক্সবাজারের অন্য সমুদ্র সৈকতের মত এটি এখনো গুছিয়ে উঠতে পারেনি। আশেপাশে পহাড়ের পাদ দেশে কিছু ছোট ছোট দোকান ছাড় এখানে খুব বেশি ভালো মানের কিছু নাই।
কিভাবে যাবেন পাটুয়ারটেক সমুদ্র সৈকত
কক্সবাজার থেকে পাটুয়ারটেক যাওয়ার জন্য আপনি পাবেন বিভিন্ন ধরনের পরিবহন ব্যবস্থা। যেমন চান্দের গাড়ি, ছোট ছোট পিপ,বাস, মাহেন্দ্র, সিএজি,তাছাড়া অটোরিকশা। এই যানবাহন গুলো পর্যটকরা ইচ্ছা করলে ভাড়া করে রির্জাভ নিতে পারেন। তাছাড়া ভাড়া দিয়ে পাটুয়ারটেক যেতে পারেন। ভাড়া এক যানবাহন থেকে অন্য যানবাহনে একেক রকম। আপনারা যদি সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে যান তাহলে ভাড়ার বিষয়টি আলোচনা করে মিটিয়ে নেওয়াই ভালো। তাছাড়া এখানে জন প্রতি ভাড়া সাধারনত ৭০ থেকে ৮০ টাকা মাত্র তারপরও কথা বলে নেওয়া ভালো।
কোথায় থাকবেন এবং খাবেন পাটুয়ারটেক সমুদ্র সৈকত
পাটুুয়ারটেক সমুদ্র সৈকতটির আশেপাশে থাকা খাওয়ার কোন ভালো ব্যবস্থা নেই। পর্যটকরা এখানে আসলে অবশ্যই দিন এসে দিনে চলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। তবে কোন ভ্রমন পিপাসু লোক যদি এখানে থাকতেই চায় তাহলে তাকে ইনানী সি বিচে থাকতে হবে। কারন ইনানী সি বিচ পাটুয়ারটে সমুদ্র সৈকত থেকে খুব বেশি দুরে নয়, ইনানী সি বিচের আশেপাশে কিছু ভালো মানের হোটেল,রিসোর্ট,কটেজ, খাবারের দোকান রয়েছে। আর ইনানী থেকে পাটুয়ারটেক সী বিচের দুরত্ব মাত্র ৩-৪ কিলোমিটার। তাই খুব সহজেই পর্যটকরা ইনানৗ থেকে পাটুয়ারটেক যেথে পারবে খুব অল্প সময়ে।